এসিড কাকে বলে? (What is called Acid in Bengali/Bangla?)
যে সব যৌগ জলীয় দ্রবণে আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দান করে সেসব যৌগকে এসিড বলে।
উদাহরণ : সালফিউরিক এসিড, হাইডোক্লোরিক এসিড (HCl) ইত্যাদি।
এসিডের ব্যবহার (Use of Acid)
দৈনন্দিন জীবনে এসিডের ব্যবহার :
- বিভিন্ন টক স্বাদযুক্ত ফল যেমন কমলা, লেবু, টমেটো, তেতুল ইত্যাদিতে এসিড থাকে। যা আমাদের মুখে রুচি আনে, খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে, ভিটামিন-সি এর চাহিদা মেটায় এবং রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- আমাদের পাকস্থলির দেওয়াল থেকে যে হাইড্রোক্লোরিক এসিড উৎপন্ন হয়, খাদ্য পরিপাকে তা আবশ্যক।
- টয়লেট পরিষ্কারে যেসব পরিষ্কারক ব্যবহার করা হয় তাতে এসিড থাকে।
- বহুল ব্যবহৃত ব্যাটারিতে সালফিউরিক এসিড ব্যবহৃত হয়।
- সাপের উপদ্রব কমানোর জন্য কার্বোলিক এসিড ব্যবহার করা হয়।
- ডিটারজেন্ট, নানা রকম রং, ঔষধ, কীটনাশক, পেইন্ট, কাগজ, বিস্ফোরক ও রেয়ন তৈরিতে H2SO4 ব্যবহৃত হয়।
- ইস্পাত তৈরির কারখানা, ঔষধ, চামড়া শিল্প ইত্যাদিতে HCl এসিড ব্যবহৃত হয়।
- সার কারখানা, বিস্ফোরক প্রস্তুত, খনি থেকে মূল্যবান ধাতু, যেমন : সোনা আহরণে ও রকেটে জ্বালানির সাথে নাইট্রিক এসিড (HNO3) ব্যবহৃত হয়।
ক্ষারক কাকে বলে? (What is called Base in Bengali/Bangla?)
যে সকল যৌগ পানিতে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) প্রদান করে, সে সকল যৌগকে ক্ষারক বলে। যেমন, Ca(OH)2 একটি ক্ষারক। কারণ, Ca(OH)2 জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH-) প্রদান করে।
ক্ষারকের ব্যবহার (Use of Base)
দৈনন্দিন জীবনে ক্ষারকের ব্যবহার :
- বাসাবাড়িতে পরিচ্ছন্নতার কাজে ক্ষার জাতীয় পদার্থের বেশ ব্যবহার আছে। যেমন : সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড বা কস্টিক সোডা (NaOH) টয়লেট ক্লিনার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড কাঁচ পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড পান খাওয়ার চুন বা দেওয়ালের চুনকাম করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইডের পাতলা দ্রবণ চুনের পানি/ওয়াটার লাইম বাসাবাড়িতে হোয়াইট ওয়াস করতে ব্যবহৃত হয়।
- পানি ও ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড এর তৈরি পেস্ট যা মিল্ক অফ লাইম (Milk of Lime) নামে পরিচিত, পোকামাকড় দমনে ব্যবহৃত হয়।
- পাকস্থলীর এসিডিটি নিরাময়ে ব্যবহৃত এন্টাসিড ঔষধ মূলত ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড [Mg (OH2)] বা অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড [Al(OH)3]।
দাঁতের যত্নে ক্ষারকের ব্যবহার : মানুষের মুখের অভ্যন্তরে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা খাবার খায় এবং এসিড উৎপন্ন করে। উৎপন্ন এই এসিড দাঁতের এনামেলকে আক্রমণ করে দাঁতের ক্ষয় সাধন করে। তাই দাঁতকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য এসিডকে প্রশমিত করার দরকার হয়। এজন্য যখন আমরা দাঁত ব্রাশ করি, তখন টুথপেস্টে থাকা ক্ষার মুখে উৎপন্ন এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে। অর্থাৎ এসিডকে প্রশমিত করে ফেলে। ফলে দাঁত সুরক্ষিত থাকে।
এসিড ও ক্ষারকের পার্থক্য কি? (What are the different acids and bases?)
এসিড ও ক্ষারকের পার্থক্য তুলে ধরা হলোঃ
এসিড
১. এসিড জলীয় দ্রবণে প্রোটন দান করতে পারে।
২. এসিড ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
৩. নীল লিটমাসকে লাল করে।
৪. এসিড অম্ল স্বাদযুক্ত।
ক্ষারক
১. ক্ষারক জলীয় দ্রবণে হাইড্রোক্সিল আয়ন প্রদান করতে পারে।
২. এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
৩. লাল লিটমাসকে নীল করে।
৪. ক্ষারক কটু স্বাদযুক্ত।