Posts

১০. আল-জাব্বার ll মহান আল্লাহর ৯৯ নাম ও তার অর্থ (ইসমে আজম) ll

 

১০ আল-জাব্বারالجبار
অর্থঃ দুর্নিবার, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত
✸ Al-Jabbar
- The One that nothing happens in His Dominion except that which He willed.
- The all Compelling

আল-জাব্বার (মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত)[1]

শাইখ আস-সা‘দী রহ. বলেছেন, আল-জাব্বার শব্দের অর্থ সমুচ্চ, মহিমান্বিত। আবার এ শব্দের অর্থ আল-কাহহার তথা মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী। আবার জাব্বার অর্থ আর-রাঊফ তথা প্রতি স্নেহশীল, সদয় ও সমবেদনা প্রকাশকারী। তিনি ভঙ্গ হৃদয়ের অধিকারী, দুর্বল, অক্ষম, যারা তাঁর কাছে ফিরে আসে ও আশ্রয় চায় তাদের জন্য তিনি অতি স্নেহশীল ও সদয়।[2]

এ নামের তিনটি অর্থ রয়েছে। সব অর্থই তাঁর আল-জাব্বার নামের অন্তর্ভুক্ত। তিনি দুর্বল ও তাঁর জন্য নিবেদিত ভঙ্গ হৃদয়কে আশ্রয় দান করেন। ফলে তিনি দুর্বল ভঙ্গ হৃদয়ের অধিকারীকে স্নেহ ও মায়া-মমতা করেন, গরিবকে ধনী করেন, বিপদাপদে পতিত সমস্ত কঠোরতাকে তিনি সহজ করেন, তাঁর তাওফিকে বিপদে আপতিত ব্যক্তিকে স্নেহ করে সাহায্য করেন, তাকে অটল ও ধৈর্যধারণে সহযোগিতা করেন, বিপদে আপতিত ব্যক্তি যথাযথ ভাবে বিপদে ধৈর্যধারণ করলে তাকে এর চেয়েও বেশি পুরষ্কার দান করেন, তাঁর বড়ত্ব ও মহত্বের সামনে অনুগত ব্যক্তিকে তিনি মহা পুরষ্কার প্রদান করেন, তাঁকে ভালোবাসাকারী অন্তরকে তিনি নানা সম্মান, মর্যাদা ও ঈমানের বিভিন্ন অবস্থাভেদে পুরষ্কার প্রদান করে পুষিয়ে দেন। সুতরাং তাঁকে ভালোবাসা বিনীত হৃদয়ের পুরষ্কার হলো তিনি তাদের কাছেই থাকেন, তারা তাঁকে ডাকলে তিনি তাদের ডাকে সাড়া দেন। কেউ তাঁকে এভাবে ডাকলে, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাকে স্নেহ ও মায়া প্রদান করুন।’ তিনি এ স্নেহ দ্বারা প্রকৃতপক্ষে বান্দার সংশোধন ও যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে তাকে রক্ষা করা উদ্দেশ্য বুঝায়।

আল-জাব্বারের দ্বিতীয় অর্থ হলো আল-কাহহার তথা মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী। সৃষ্টিজগতের যা কিছু তাঁর নৈকট্য অর্জন করে, যা কিছু তাঁর কাছে বিনীত, নিবেদিত এবং অন্য যা কিছু যেভাবেই থাকুক তিনি সবার জন্য আল-জাব্বার তথা মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী।

আল-জাব্বার শব্দের আরেক অর্থ সমুচ্চ, মহিমান্বিত। তিনি সব কিছুর ঊর্ধ্বে, তিনি মহিমান্বিত। অত:এব, আল-জাব্বার শব্দের অর্থ আর-রাঊফ তথা প্রতি স্নেহশীল, সদয় ও সমবেদনা প্রকাশকারী; আল-কাহহার তথা মহাপ্রতাবশালী, দমনকারী; সমুচ্চ, মহিমান্বিত। আবার কখনো আল-জাব্বারের আরেক অর্থ আল-মুতাকাব্বির তথা সর্বশ্রেষ্ঠ, গৌরবান্বিত, অহংকারী। তিনি যাবতীয় দোষ-ত্রুটি মুক্ত এবং কারো অনুরূপ হওয়া, কেউ তাঁর সমকক্ষ, বিপরীত, উচুঁ, অংশীদার ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য থেকে তিনি মুক্ত।[3]


[1] এ নামের দলিল হলো, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَيۡمِنُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡجَبَّارُ ٢٣ ﴾ [الحشر: ٢٣]

“তিনিই আল্লাহ; যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনিই বাদশাহ, মহাপবিত্র, ত্রুটিমুক্ত, নিরাপত্তাদানকারী, রক্ষক, মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী, অতীব মহিমান্বিত।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ২৩]

[2] আত-তাফসীর, ৫/৬২৪।

[3] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৭৭; তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২৬।


 


© Arefin Masuk. All rights reserved. Premium By FC Themes